সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

শিরোনাম- সফলতার আছে কি কিছু সূত্র?✍️ ডা:অরুণিমা দাস

শিরোনাম- সফলতার আছে কি কোনো সূত্র?
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

সফলতার চাবিকাঠি কি! আছে কি কারো জানা!
বুদ্ধির গোড়ায় শান দিয়ে যায় কি তারে কেনা?

বসে থাকলে দেবে না তো সে ধরা
চালাকি করতে গেলে নিজেই বিপদে পড়া।

দৈহিক ও মানসিক বল,দুই দিয়েই যায় যে জেতা 
তবেই তো যোগ্য তুমি, হবে আপনার ত্রাতা। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

শিরোনাম - গেম অফ নেচার✍️ ডা: অরুণিমা দাস

শিরোনাম - গেম অফ নেচার
✍️ ডা: অরুণিমা দাস

আজকের ব্রেকিং নিউজ! আর কয়েক ঘণ্টা পর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। মোবাইলে এটা শুনেই রায়ান ভাই ঋতানকে ডাকলো, উঠে পড় ভাই। আমাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে হবে। কেনো রে দাদা? কি হয়েছে? আরে আজ বিকেলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। চটপট গুগল ড্রাইভে মুভি আর স্টোরি বুকগুলো আপলোড করে নে। আর হ্যা ব্যাকপ্যাক টা গুছিয়ে নে, অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ কভার টা নিবি। আমরা তো তলিয়ে যাবো জলের তলায়, সেখানে এগুলোই হয়তো বেচেঁ থাকবে আমাদের স্মৃতি হিসেবে। কিন্তু দাদা তুই কোথায় যাবি আমায় ছেড়ে? কেঁদে উঠলো ঋতান। আরে কোথাও যাবোনা রে! আমরা তো একসাথে জীবাশ্ম হয়ে বেচেঁ থাকবো। শুনে আরো জোরে দাদাকে জড়িয়ে ধরলো রিতান। দাদা আমার ভিডিও গেমস গুলো? ওসব ভুলে যা ভাই। একটু পরেই আর্থ ডিসাস্টার গেম শুরু হবে। মুখে হাসি ফোটালেও রায়ান মনের মধ্যে গুমরোতে থাকে, ভাইকে ছেড়ে থাকবে কি করে সে? আর বিকেলের খেলার মাঠ টা? বন্ধুগুলো কেও হারিয়ে ফেলতে হবে। ল্যাপটপ খুলে সব ফ্রেন্ডস কে মেইল করতে থাকে। একটা গুগল মিট অ্যারেঞ্জ করার প্ল্যান করে। মিটিংয়ে আলোচনা হতে থাকে আজ যদি সবাই ফ্ল্যাট বাড়ি না তুলে গাছ গুলোকে বাঁচতে দিত হয়তো পৃথিবী ধ্বংস হতোনা। কেউ কেউ আবার মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার কথা বলতে থাকে। রায়ান বলে অনেক দেরি হয়ে গেছেরে। দেখ বাইরে আকাশটা কেমন থম মেরে গেছে। দুর্যোগের পূর্বাভাস এটা। আকাশে একটা লাল আলোর রেখা আর তার সাথেই হঠাৎ করে ল্যাপটপ কানেকশন অফ হয়ে যায়। বন্ধুগুলো সব হারিয়ে যেতে থাকে গুগল মিট থেকে। রায়ান চেঁচিয়ে উঠল, রীতান তুই কোথায়? পৃথিবী বোধহয় ভাসতে চললো। রীতান ব্যাকপ্যাক নিয়ে দাদার পাশে এসে দাঁড়ালো। মুখ টা ভয়ে শুকিয়ে গেছে। বাবা মায়ের ডিভোর্সের পর দাদাই তার কাছে বাবা মা সব। সমুদ্রের জল আগ্রাসী হয়ে ধেয়ে আসছে, ডুবতে শুরু করেছে পৃথিবী, রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে। ল্যাপটপ আর অন হলো না। মোবাইলের স্ক্রিনে ফুটে উঠছে অন্যান্য জায়গা ধ্বংস হবার ছবিগুলো। রায়ান তার লাইব্রেরীটা ঘুরে দেখে নেয়,বইগুলোকে আর তো দেখতে পাবেনা কোনোদিন। পারলে বইগুলো নিয়েই না হয় ডুবত অতল জলের গভীরে। জল ঢুকতে শুরু করেছে ঘরে,পকেটে ফোনটা নিয়ে নিজের প্রিয় লেখার ডায়েরিটা নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে রায়ান। পাতা খুলে লিখতে শুরু করে,
" ধ্বংস হচ্ছে পৃথিবী,সৃষ্টিরা বেচেঁ থাক নিজের মতো করে
অতল জলের গভীরে খুঁজো রায়ান ঋতান থাকবে জীবাশ্মের ভিড়ে"!
কোনরকমে এই দুটো লাইন লেখার পরই অতল এক গহ্বরে হারিয়ে যেতে থাকে রায়ান,একটা হাতে ডায়েরি অন্য হাতে ভাইকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরা। বিশাল জলরাশি সব গ্রাস করে নিচ্ছে স্থলভাগকে। প্রকৃতির ধ্বংসলীলার কাছে যে মানুষ নিমিত্ত মাত্র। জলের গভীরে তলিয়ে যাওয়ার সময় ভাইয়ের মুখের দিকে চেয়ে শুধু বলে,ভালো থাকবো আমরা যেখানেই থাকবো। একেই বোধহয় বলে রিভেঞ্জ অফ নেচার।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস



শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

বিষয়-নাটিকা শিরোনাম-টার্গেট ✍️ ডা: অরুণিমা দাস

 বিষয়-নাটিকা
 শিরোনাম-টার্গেট
✍️ ডা: অরুণিমা দাস


স্কুলে অ্যানুয়াল প্রোগ্রাম চলছে। নাটক মঞ্চস্থ হবে। নাম টার্গেট। সবাই খুব মনোযোগ নিয়ে দেখতে বসেছে। পর্দা সরিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করলো নাটকের শিল্পীরা। দুই বন্ধু (সোমেশ ও অমিত) কথোপকথনে ব্যস্ত।
সোমেশ : মনে পড়ে ছোটবেলার দিনগুলো তোর
অমিত? কী সুন্দর আমরা একসাথে স্কুলে যেতাম, খাওয়া দাওয়া খেলা ধুলো করতাম।

অমিত: হ্যা রে, ভীষণ মনে পড়ে সেই দিন গুলো। আর তুই যা কান্ড করতিস ভুলি কি করে বল সেসব?

সোমেশ: কি করতাম রে? খুব বেশি কিছু করতাম কি?

অমিত: বাব্বা! তুই তো ব্যাট ছাড়া কিছুই করতিস না। বল করতে চাইতিস না কিছুতেই। একদিন সেই তপনের সাথে ঝামেলা হলো,তুই ওর ব্যাটটা ভেঙে দিলি।

সোমেশ: হ্যা আমি ব্যাট কাউকে করতে দেবো না এটাই টার্গেট ছিল। সবাই আমায় শচীন বলে খেপাত, রেগে যেতাম। কিন্তু আমি জানতাম শচীন হতে না পারি কোনোদিন, জীবনের হালটা ব্যাটের মত করেই চিরকাল ধরে রাখতে হবে আমায়।

অমিত : হ্যা আজকাল তো টার্গেট পূরণ করার চক্করে বাচ্চাগুলো খেলাধুলা ভুলে গেছে। দিনরাত অনলাইন ক্লাস আর এক্সাম। সময় পেলেই মোবাইল ফোনে গেম। আর কিছু করছে না এরা।

হঠাৎ করে একটা ছেলে দৌড়তে দৌড়তে আসে অমিতের কাছে। বাবা দেখো না আমার ফোনটা হ্যাং করছে, ক্যান্ডি ক্রাশ টা খেলতে পারছি না।

সোমেশ : তোর ছেলে বুঝি?

অমিত: হ্যা রে, এই নয় বছর হলো ঋজুর বার্থ ডে তে ওর মামা মোবাইল গিফট করেছে। তারপর থেকেই ক্যান্ডি ক্রাশ নিয়ে বসে থাকে সারাক্ষণ।

সোমেশ : ঋজু এদিকে এসো তো একবার।

ঋজু : আসছি আঙ্কেল

সোমেশ : দেখো বাবু তোমায় দিয়ে সারাদিন যদি কেউ হোম টাস্ক করায় ভালো লাগবে তোমার? নিশ্চই বিরক্ত লাগবে, ক্লান্ত লাগবে।

ঋজু : হ্যা আঙ্কেল

সোমেশ: তাহলে তুমি মোবাইল টা নিয়ে ওকে সারাক্ষণ টাস্ক কেনো করাও? ওকেও রেস্ট দাও। তবেই না ও হ্যাং করবেনা। তোমার জন্য একটা জিনিস আমি নিয়ে আসবো এরপর যেদিন আসবো।

ঋজু : কি আংকেল?

সোমেশ : আউটডোর গেমস লাইক ব্যাট বল, ফুটবল এসব।

ঋজু : বাহ আঙ্কেল। এসব তো খেলতে খুব ইচ্ছে করে কিন্তু পাপা ছাড়ে না। বলে পড়ার টাইম নষ্ট হবে।

অমিত : আমতা আমতা করে বলে, না না! ওরম কিছু নয় রে।

সোমেশ : দেখ আমার মনে হয় জীবনের ক্রিজে মাঝে মাঝেই মোবাইল গেমস অফ করে ব্যাট বল নিয়ে নেমে পড়া উচিত। এতে বাচ্চাদের সাথে প্রকৃতির সংযোগ স্থাপন হবে, ওদের চিন্তা ভাবনার বিকাশও হবে।

অমিত : হ্যা, ঠিক বলেছিস রে! আমরা শুধু পরীক্ষার রেজাল্টে নাম্বার বেশি পেতে হবে এই টার্গেট দিয়ে বাচ্চাদের জীবনের খাতার নাম্বার বড্ড কমিয়ে ফেলছি।

সোমেশ : ঠিক বুঝেছিস তাহলে! ঋজু বাবু নেক্সট যেদিন দেখা হবে সেদিন আর ঘরে নয়, মাঠে আমরা ব্যাট বল নিয়ে মিট করবো। ওকে।

ঋজু : ওকে আঙ্কেল। ডান।

অমিত : একটা ছোট্ট ঘটনার মধ্যে দিয়ে জীবনের কতো বড়ো শিক্ষা দিলি তুই বন্ধু!

সোমেশ : ওটাই তো আমার কাজ। শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে শিশুদের মন পড়া আর ওদের বোঝানো নাম্বার টাই সব নয়। পরীক্ষার খাতায় দু এক নাম্বার কম এলেও হবে। মানুষ হিসেবে যেনো নম্বর না কমে।

অমিত : গ্রেট বন্ধু, গ্রেট! ঋজু মনে রেখো কথা গুলো। জীবনে অনেক কাজে লাগবে।

ঋজু : ইয়েস পাপা। আউটডোর গেমস আর মোর ইম্পর্ট্যান্ট।

সোমেশ : হাতে থাক ব্যাট, লড়তে থাকি জীবনের লড়াই
চলার পথ ক্রিজ হোক,জীবনে সবার সাপোর্ট থাকা চাই।

তিনজন হাসি মুখে হাত মেলালো। স্টেজের আলো জ্বলে উঠলো। হাততালি তে মেতে উঠলো দর্শক গণ।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪

মুখোশ✍️ ডা:অরুণিমা দাস

 মুখোশ
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

সময়েই আসল পরিচয় প্রকাশ পায় বন্ধু ও আত্মীয়
দের। সময় সবার মুখোশ খুলে দেয়। আজ যারা হাসিমুখে পাশে বসে কথা বলছে তারাই দুঃসময়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আসলে দুনিয়াতে সুবিধাবাদী মানুষের সংখ্যা খুব বেশি, প্রকৃত বন্ধুর খুব অভাব। সেই গুটিকয়েক বন্ধুই আসল সম্পদ। বাকি সব নাম কা ওয়াস্তে বন্ধু,কাজের সময় তাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়না। আর বিপদের সময়েই আত্মীয় স্বজন আর বন্ধুদের আসল রূপ বেরিয়ে আসে। তখন অনেক আপনই পর হয়ে যায়, প্রকট হয় তাদের নীচু মানসিকতা। এসব লোকেদের জীবন থেকে ছেঁটে ফেললে অনেক মসৃণ হয় জীবনে চলার পথ। মনে পড়ে যায় রবি ঠাকুরের বাণী 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,তবে একলা চলো রে'! খারাপ সময় হয়তো কাটিয়ে ওঠা যায় কিন্তু খারাপ সময়ে করা মানুষের খারাপ ব্যবহারগুলো মনে যে ক্ষত সৃষ্টি করে সেগুলো মাঝে মাঝেই মনকে নাড়া দিয়ে যায়। তাই জীবনে কমসংখ্যক আত্মীয় বন্ধু থাক কিন্তু প্রকৃত মানুষ থাক,তারা চিরস্থায়ী হোক।

"দু:সময়ে পরিচয় পাওয়া যায় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু,সবার
বন্ধুর পথ চলতে যারা থাকে পাশে,তারা বড়ই আপনার"। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

শিরোনাম - খেলোয়াড়✍️ ডা: অরুণিমা দাস

শিরোনাম - খেলোয়াড়
✍️ ডা: অরুণিমা দাস

ভেঙে পড়লে কি হবে লাভ! করতে হবে লড়াই
হার জিত সব গৌণ, মুখ্য যে খেলাটাই।

মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া- নয় কোনো সমাধান
হাল না ছেড়ে লক্ষ্যের পথে হও আগুয়ান।


ঘাত প্রতিঘাত আসবেই!গুটিয়ে নিলে হাত পা, চলবেনা
খেলতে হবে বুক চিতিয়ে, না মেনে কোনো মানা। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

হাতিয়ার হোক মনোবল✍️ ডা:অরুণিমা দাস

হাতিয়ার হোক মনোবল
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

প্রতিবন্ধকতা, যা এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্তরায় সেটা হলো মানসিক, যা শারীরিক অক্ষমতার থেকেও বেশী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও কেউ জয়ের রশি ছুঁতে পারে যদি মানসিক ভাবে দৃঢ় হয়। মন সবকিছুর আধার, চিন্তা হোক বা ইচ্ছাশক্তি হোক। সে যদি সাড়া দেয় যে কোনো কাজই শক্ত নয়, দৃঢ়চেতা মানসিকতা নিয়ে সেই কাজ সুসম্পন্ন করা যায়। দুটো পা না থাকা সত্ত্বেও মাসুদুর রহমান ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিলেন শুধু মনের জোরে। কেউ যদি মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়ে তাহলে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। জীবনে চলার পথে অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হবে, কিন্তু সেগুলো তুরি মেরে উড়িয়ে দিতে পারে একমাত্র মানসিক কাঠিন্য সম্পন্ন মানুষ। মনকে সবসময় চাঙ্গা রাখতে হবে, তাহলেই যে কোনো প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া যাবে। আর ইচ্ছাশক্তি হলো মানসিক ভাবে দৃঢ় থাকার হাতিয়ার। পজিটিভ চিন্তা আর মানসিক কাঠিন্য এই দুইয়ের সম্মিলন শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে হটিয়ে জীবনে জয়ের অন্য এক মাত্রা এনে দেয়। 

"জীবন যখন কঠিন হয়ে ওঠে শারীরিক প্রতিবন্ধকতায়, মনটি থাকে যেনো শক্ত
মনের জোরে সব বাঁধা কাটিয়ে উঠে জয়ের রাস্তা হোক পাকাপোক্ত।"

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

শিরোনাম-লহ প্রণাম✍️ ডা:অরুণিমা দাস

শিরোনাম-লহ প্রণাম
✍️ ডা:অরুণিমা দাস


প্রণমি তোমারে অন্তর হতে,প্রিয় কবি হে মোর 
হিয়ার মাঝে সদা প্রাণবন্ত তুমি,তোমার কণ্ঠস্বর।

স্কুলের পথ ভুলেছ, সৃষ্টি করেছো অসামান্য রচনা
লেখালিখির চেষ্টা করি সামান্য,তুমি যে অনুপ্রেরণা।

জটিল জীবন সহজ হয়,তোমার লেখায় আর গানে
আশার আলো সঞ্চার হয় অন্ধকারের মধ্যিখানে।

দিকে দিকে চলছে যে পঁচিশে বৈশাখ উদযাপন 
আজ তোমার জন্মদিনে জানাই সশ্রদ্ধ অভিবাদন।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

প্রতিকার✍️ ডা:অরুণিমা দাস

প্রতিকার
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

বাইরে থেকে মনে হয় জীবন ভারী সুন্দর
সমস্যায় ভরা যে তখন মনের অন্দর।

কষ্ট নিয়ে কাটছে দিন, মুখে আছে হাসি
জীবনকে সকলে যে বড়ই ভালবাসি। 

এক গলা সমস্যায় ডুবে গিয়ে মানুষ যখন হয়ে যায় নির্বিকার
ভয় কি!জীবনের স্রোতে ভাসতে ভাসতেই মিলবে তার প্রতিকার।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

লেটার টু বৃষ্টি✍️ ডা:অরুণিমা দাস

লেটার টু বৃষ্টি
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

প্রিয় বৃষ্টি দি,

         কবে আসবে তুমি দিদিভাই? তোমার আসার আশায় পাড়া প্রতিবেশী রা তো আমাদের বিয়ে দিয়ে দিলো। এদিকে রোজ বরের মা হুমকি দিচ্ছে ছেলের গলায় তো ঝুলে পড়েছো, এবার তোমার বৃষ্টি দিদি যদি না আসে তাহলে তোমায় কিন্তু চিরকালের মতো এই বাড়ী থেকে বিদেয় করে দেবো। বুঝতে পারছো আমার কষ্টটা? একটুও শান্তি পাচ্ছি না গো! রোজ রোজ হুমকি সহ্য হচ্ছে না। একবার তো এসো, প্লীজ। তুমি এলে তবেই আমার শ্বশুর বাড়িতে থাকা টা পাকাপোক্ত হবে। এখন আর বুড়ো বাবা মায়ের বোঝা হতে চাইনা গো। বিয়াল্লিশ ডিগ্রী তে আর আগের মতো গলার আওয়াজ বেরোয় না, কেমন গলা শুকিয়ে ডিহাইড্রেশন হয়ে যায়। আগে তো একত্রিশ ডিগ্রী তে ডাকলেই চলে আসতে, এখন এত হাই ভ্যালু করছো কেনো নিজের? বিয়াল্লিশটা চব্বিশ হলে তবে আমিও বাঁচবো আর আসে পাশের মানুষ গুলো ও বাঁচবে। আমার সংসার টা টিকে যাবে এ যাত্রায়। একবার এসো, দেখা দিয়ে যাও। অপেক্ষায় রইলাম তোমার আসার। সকলের তৃষ্ণার্ত প্রানকে একটু জুড়িয়ে দিয়ে যাও। ভালোবাসা নিও দিদিভাই।
                                                            ইতি
                                                       মিসেস ফ্রগ
ঠিকানা : ছতরী লেন

©️রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস


 
             
                                       


বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

শিরোনাম- বদল✍️ ডা:অরুণিমা দাস

শিরোনাম- বদল
✍️ ডা:অরুণিমা দাস


পরিবর্তনের হাওয়ায় সকলে গা ভাসাতে চায় কিন্তু সেটা রাজা বা রঙের পরিবর্তন নয়, দিনের পরিবর্তনের হাওয়ায়। আদৌ কি দিনের পরিবর্তন হয়? নাকি রঙের পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করা হয়! সিংহাসনে বসলেই তখন আসল ভাবমূর্তি প্রকাশ পায় রাজার। পরনের পোশাক পরিবর্তনের সাথে সাথে মনেরও পরিবর্তন হয়। প্রজাদের কথা তখন মাথায় থাকে না,থাকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার চিন্তা। লাল নীল সবুজ পোশাকের পরিবর্তন হলেও প্রজাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। তারা যে তিমিরে ছিলো সেই তিমিরেই পড়ে থাকে। রাজা তো শুধু নামে হলেই হয়না, কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেকে রাজা প্রমাণ করতে হয়। আর সেই প্রমাণের চেষ্টা অনেকের মধ্যেই থাকেনা, থাকে শুধু নিজের আখের গোছানোর চেষ্টা,তাও প্রজাদের বঞ্চিত করে। যতই রাজা আসুক যাক, যতই রাজার পোশাক বদলাক,রঙের বদল হয়তো হয় কিন্তু দিনের কোনো পরিবর্তন হয়না। আর যতদিন না প্রজারা রাজার পোশাকের আড়ালে থাকা কদর্য মনকে চিনতে পারবে ততদিন কোনো পরিবর্তন হবে বলে আশা করাও সমীচীন নয়। রাজার পোশাকে মন না দিয়ে যদি কেউ আসল সত্যটা বলতে পারে "রাজা তোর কাপড় কোথায়?" 
,সমাজের অবক্ষয় অনেকটা হলেও রোখা যেতে পারে। তাই যতক্ষণ না কেউ গলা তুলে প্রতিবাদ করছে ততদিন রাজা আর রাজার পোশাকেরই পরিবর্তন হবে, দিন কালের কোনো পরিবর্তন হবে না। 

"রাজা আসে পোশাকের, কেবলই লাল নীল রং বদলায় 
প্রজারা তো পোশাক নয়,দিন বদলের গল্প শুনতে চায়।" 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

শিরোনাম - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা✍️ ডা:অরুণিমা দাস

 শিরোনাম - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
✍️ ডা:অরুণিমা দাস


মগজাস্ত্রে দাও শান, বুদ্ধি হোক ক্ষুরধার
নির্ভর কোরোনা কৃত্রিম উপায়ের উপর।

মস্তিষ্ক কোষ বিকশিত হয় নিজস্ব চিন্তাধারায়
চ্যাট জি পি টি,এসকল উদ্ভাবনী শক্তির পথে অন্তরায়।

অলস হতে দিওনা মগজকে,
আসুক যতই উন্নত গ্যাজেট
স্মৃতিশক্তি হবে তাজা, আলঝাইমার্সকে দূরে রাখাই হোক টার্গেট। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪

আশা নিরাশার দোলাচলে✍️ ডা:অরুণিমা দাস

আশা নিরাশার দোলাচলে
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

নিজের কাজ করে যাও মন দিয়ে,আশা রেখোনা ফলের
জীবন তোমার ভরিয়ে দেবে অপেক্ষা সঠিক সময়ের।

আশায় আশায় বুক বেঁধে, সহ্য কি হয় না পাওয়ার বেদনা!
তার চেয়ে মন দিয়ে করো নিজের কর্ম,ফল তো উপরি পাওনা। 

সব চাওয়া তো হয়না পাওয়া,চেয়ে চেয়ে হয়োনা হদ্দ
ঈশ্বর তোমার জন্য রেখেছেন যে শ্রেষ্ঠ উপহার বরাদ্দ।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদের চাঁদ ✍️ডা:অরুণিমা দাস

ঈদের চাঁদ 

✍️ডা:অরুণিমা দাস 


কই রে! কই গেইল্যি রহিমের মা! আয় বাইরে আইস্যা দেইখ্যা যা কি আনছি! আব্দুল ডাক দেয় তার বিবি হালিমাকে। বাড়ীর মধ্যে থেকে হালিমা বেরিয়ে আসে,বলে এত চেঁচাও ক্যান্? কও কি হইছে কি? আবদুল বলে আজ এক জায়গায় মজুরের কাম কইরা বেশ কিছু ট্যাহা পাইছিরে বিবি। তাই রহিমের লাইগ্যা কিছু ফল আর মাংস আনছি। ইফতারে তো কুনোদিন ছেলেটারে ভালো কিছু খেতে দিতে পারি নাই রে। আগে বসো দাওয়ায়,খানিক সময় জিরোয় লও দেখি। খালি কাম আর কাম! দিন দিন শরীল খান ভাইঙ্গা পড়তাসে,সে দিকে খেয়াল আছে তোমার? আরে এতো কষ্ট কইরা রহিম রে পড়াইতাসি, ও বড়ো হইলে আমাদের কষ্ট কমবে রে। হ্যা আব্বু,আমি বড়ো হই,অনেক বড় চাকরী করুম,তোমারে আর আম্মুরে শহরে নে যাবো। কুনো কষ্ট থাকবেনা আর আমাদের। আল্লাহর কাছে দোয়া করি বাপ,তোর কথাখান যেনো সইত্য হয়। এর মাঝেই হালিমা ফল আর লেবুর জল এনে হাজির করে, বলে চলো নামাজ পইর‍্যা ইফতার কইর‍্যা লও। আমি তারপর খাইয়া মাংস রান্না কইরবো। রহিম ভালোছেলের মত ফল আর সরবত খেয়ে নেয়। তারপর দাওয়ায় গিয়ে পড়তে বসে। উঠোনে হালিমা রান্না করতে যায়,আব্দুল ওখানে গিয়ে বসে। হালিমা বলে এই মাসে যে ঘরখান সারাইবে বলছিল, খেয়াল আছে তোমার? হ,আছে রে। এক খান ঘরই তো মোদের, কইষ্ট হয় রে জানি। সেটাও ভাইঙ্গা পড়সে। সেই ঘরেই রাতে রহিম পড়ে, আমরা কথা বইললে ওর অসুবিধা হয় রে,জানি। গরম কাইলটা ভাবতাসি আমরা দুজন বাইরে উঠানে মাদুর বিছায়া শুইয়া পড়বো। ঘরখান ছোট তো কি হইছে বল? খোদা এত বড় আকাশ দিছে, তার নিচেই শুইয়্যা আমরা গল্প করে কাটাইয়া দিবো। কি বলিস বিবি? হ,বুঝছি!টাকার টানাটানি যা। এই সময়ে তুমিই বা কোথায়  টাইক্যা পাইবে  বলো? রোজতো কাম ও জুইট্যে না তোমার। আরও কিছু পয়সা জমাইরে, শীত আইস্যার আগেই ঘরটা ঠিক কইরা দিবো,কইথ্যা দিলাম। আল্লাহর দয়ায় আজ রহিমের মুখে ফল তুইল্যা দিতে পারসি যখন, ওনার দয়াতেই একদিন ঘরটাও সাইর‍্যা ফেলাইবো দেখিস। হ তাই যেনো হয়, রোজ তো তাই দোয়া করি। এখন না হয় ঈদের চাঁদ দেইখ্যার অপেক্ষায় আকাশের নিচেই রাতে ঘুমাইয়া পইড়বো। দুরে কোথাও থেকে গান ভেসে আসে ওদের কানে, "নীড় ছোট ক্ষতি নেই, আকাশ তো বড়ো।"
স্বপ্ন সত্যি হোক হালিমা আর আবদুলের। শীতের আগে যেনো ঘর ঠিক করে নিতে পারে ওরা আর রহিম মানুষের মতো মানুষ হোক, এই প্রার্থনাই করি ঈশ্বরের কাছে। খুব ভালো কাটুক ওদের রমজানের বাকী কটা দিন আর খুশিতে ভরে উঠুক ঈদ।
                      ✍️✍️✍️✍️✍️✍️

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস



সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪

রেস✍️ ডা: অরুণিমা দাস

 রেস
✍️ ডা: অরুণিমা দাস


অনেকখানি এগোতে হলে মাঝে মাঝে হাঁটতে হয় বিপরীত ভাগে
টার্গেটে পৌঁছতে তীরও যে পিছু হটে ধনুক হতে নিক্ষেপের আগে। 

ভালো মন্দ যাই হোক শিক্ষা নিও সেটার থেকে
আশা নিরাশা এই দুই নিয়েই উপভোগ করো জীবনকে। 
 
রেসের মাঠে তাই কখনো সখনো যেতে হয় পিছিয়ে
জীবন হয়তো অপেক্ষা করছে আরো ভালো কিছু নিয়ে। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪

সুন্দর অসুন্দর✍️ ডা:অরুণিমা দাস

 সুন্দর অসুন্দর
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

ভালো খারাপ, কুশ্রী সুশ্রী এগুলো শুধু মানুষের মনের অভিব্যক্তি। মনের সাপেক্ষে কিছু জিনিস ভালো কিছু জিনিস মন্দ। হয়তো কারোর কাছে যেটা ভালো অন্যের কাছে সেটা খারাপ। যে দৃষ্টিভঙ্গি তে দেখবে সেরকম ই হবে। মানসিকতা যেরকম হবে সেই চোখেই দেখবে মানুষ। ভালো মন্দ সব ই আপেক্ষিক। দেখার মত জ্ঞান চক্ষু অনেকেরই নেই। বাইরের মলাট দেখে যেমন বইয়ের গুণমান বিচার করা যায়না তেমনি কারোর বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে তার মানসিকতা বিচার করা যায় না। সুন্দর মনের মানুষ যেটা আজকাল খুব ই কম দেখা যায়,তাদের কাছে দুনিয়ার সব কিছুই সুন্দর। ভালো মন্দ আলো অন্ধকার এগুলো যেমন চক্রাকারে আসে সুন্দর বিশ্রী এরকম কিন্তু কোনো আগে পরের ব্যাপার নেই। সৌন্দর্যের কোনো মাপকাঠি কি সেভাবে হয়? যেটা হয় সেটা মানুষের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি। মন সুন্দর হলে সব সুন্দর আর আজকাল সেই মন চেনার ক্ষমতা অনেকেরই নেই। বাইরের রূপ দেখেই ছুটে চলে মরীচিকার পেছনে। আর ছুটতে ছুটতে মরীচিকা অদৃশ্য হয়ে গেলে তখন নিজের খারাপ লাগাটা প্রকট হয়ে ওঠে। নিজের ওপর বিরক্তি হয়। তাই এরকম সৌন্দর্যের কোনো মূল্য নেই আর কোনো পরিমাপও হয়না। 

"বাহ্যিক রূপে না মজে অন্তরের গভীরে দাও ডুব
সুন্দর ও অসুন্দর বিচার করা কি দরকার খুব!!"

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪

সতর্কবাণী✍️ ডা:অরুণিমা দাস

 সতর্কবাণী
✍️ ডা:অরুণিমা দাস

কুঠারের আঘাতে করেছো  ক্ষত বিক্ষত গাছটাকে 
প্রকৃতি কি ছাড় দেবে তোমায়!  প্রশ্ন করো নিজেকে।

গাছের বুকফাটা আর্তনাদে কেঁপে উঠছে সারা পৃথিবী
খরা, ভূমিকম্প এসব তো এবার অবশ্যম্ভাবী।

সময় থাকতে সতর্ক হও, কোরোনাকো এত বড় ভুল
আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য থাকে যেনো ধরা,দিতে যেনো না হয় ভুলের মাশুল। 

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী✍️ ডা: অরুণিমা দাস

 শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী
✍️ ডা: অরুণিমা দাস

বাংলা সাহিত্যে যাদের অবদান অনস্বীকার্য তাদের মধ্যেই একজন স্মরণীয় ও বরণীয় বিশিষ্ট সাহিত্যিক হলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনি তিরিশে মার্চ ১৮৯৯ সালে উত্তর প্রদেশে জৌনপুর নামক শহরে জন্ম গ্রহণ করেন।আর কোলকাতায় এসে ওনার নিবাস হয় বরানগরের আদিকুঠি এলাকায়। 

পড়াশোনা ও সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ:

মাত্র ষোলো বছর বয়সে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ম্যাট্রিক পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন। ছোটবেলা, স্কুল জীবন সবটাই মুঙ্গেরে কাটে তাঁর। আর খেলাধুলোতেও বেশ পারদর্শী ছিলেন তিনি। ছোট বেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি তাঁর একটা ভালোবাসা ছিল,কিন্তু তাঁর বাবা তারাভূষণ বন্দোপাধ্যায় চাইতেন ছেলে ব্যারিস্টার হোক। বাবার ইচ্ছে আর নিজের সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ এই দুই ভাবনার অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগতেন তিনি। বাবার ইচ্ছে রাখতে তিনি বি এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পাটনায় আইন নিয়ে পড়তে যান। কিন্তু মনে যার সাহিত্য বাস করে সে কি করে অন্য কাজে নিজেকে নিয়োজিত করবে! পরে তাঁর বাবাও হয়তো বুঝেছিলেন ছেলের মন নেই ওকালতিতে, তাই ছেলে নিজের মনের কথা শুনে সাহিত্য চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।

১৯ বছর বয়সে মুঙ্গেরের উকিল জীবন চক্রবর্তীর পৌত্রী পারুল দেবীর সাথে তার বিবাহ হয়। 
১৯২৬ সালে  পাটনা থেকে আইন পাস করে ওকালতি শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাঁর ওকালতি জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ওকালতি শুরুর তিন বছরের মাথায় পাটনা ছেড়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি দেন আর সেখানে মুভির জন্য স্ক্রিনপ্লে লেখা শুরু করেন। বেশিদিন মুম্বাই তে থাকেননি, ১৯৫২ সালে পুনে আসেন আর নিজের সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ কে প্রাধান্য দিয়ে মনোনিবেশ করেন সাহিত্য চর্চায়।

সাহিত্য জীবন - পড়াশোনা চলা কালীন কুড়ি বছর বয়সে কলেজে পড়ার সময়ে প্রথম সাহিত্য হিসেবে একটি কবিতা সংকলন প্রকাশ পায় যার নাম ছিল "যৌবন স্মৃতি"।এই সংকলনে প্রায় একুশটা মত কবিতা ছিল এবং প্রতিটি লেখাই ছিল পাঠকের মনোগ্রাহী। ওকালতি জীবনেই 'বসুমতী' তে ছাপা হয়েছিল তাঁর প্রথম গল্প 'উড়ো মেঘ'।শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় ছিল গোয়েন্দা কাহিনী। এছাড়াও সামাজিক, রোমান্টিক, ডিটেকটিভ কাহিনী, ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস রচনা করেছিলেন তিনি। তাঁর বর্ণনা রীতি ছিল অসাধারণ আর ভাষার বুনন থাকতো খুব মজবুত। অতি সহজেই তাঁর লেখা তাই পাঠকের মনে আনন্দ দান করেছিল। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। উপন্যাসের পাশাপাশি লিখেছিলেন কবিতাও। তাঁর সাহিত্যে প্রেরণার কথা বলতে গিয়ে নিজের মা বিজলীপ্রভা দেবীর কথা বলেছেন যিনি কিশোর শরদিন্দুকে পড়ে শোনাতেন  'মেঘনাদবধ কাব্য '।সেই থেকেই তাঁর মনে সাহিত্য চর্চার উন্মেষ হয়।বম্বে টকিজ ছবির গল্প লেখক হিসেবে কাজ করার সুবাদে ভাবী,বচন, দুর্গা, কঙ্কন এগুলো তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বাণিজ্যিক ফরমায়েশি পালন ছিল না তাঁর রক্তে, তাই পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা একটু ফিরতেই  আবার তিনি সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। একটা কথা তিনি সবসময় বলতেন " জীবনকে এড়িয়ে কোনোদিন গোয়েন্দা গল্প লেখবার চেষ্টা করিনি "। কি, কেনো, কবে, কীভাবের উত্তর অন্বেষণ করতে করতে বাঙালি যে কখন গোয়েন্দা হয়ে ওঠে বোঝা মুশকিল। বাঙালির এই খানা তল্লাশি করার কাজে আজও তারা গোয়েন্দা গিরিতে চোখ বন্ধ করে ফলো করে ব্যোমকেশকে। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই বাঙালি তার প্রথম প্রাইভেট ডিটেকটিভ  হিসেবে পেয়েছিল সত্যান্বেষী কে। শরদিন্দু তাঁর বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে গোয়েন্দা কাহিনী গুলোকে এক অন্য রকম মাত্রা দিয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎ কারে বলেছিলেন " ওগুলো (ব্যোমকেশের কাহিনী গুলো) নিছক গোয়েন্দা কাহিনী নয়। প্রতিটি কাহিনী আপনি শুধু সামাজিক কাহিনী হিসেবেও পড়তে পারেন"। তাই শুধু গোয়েন্দা গল্পই নয়, শরদিন্দুর যে কোনো লেখাতেই জীবন সম্পৃক্ততার পূর্ণ প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। শুধু সমসাময়িক বা জীবনের দৈনন্দিন ঘটনা কেই তিনি শুধু প্রাধান্য দেননি, ইতিহাসকেও চমৎকার ভাবে দেখতে পারতেন তিনি। নিজেই বলতেন " আমি বাঙালিকে তাহার প্রাচীনের সাথে পরিচয় করাইয়া দিবার চেষ্টা করিয়াছি। বাঙালি যতদিন না নিজের বংশ গরিমার কথা জানতে পারিবে,ততদিন তাহার চরিত্র গঠিত হইবে না..."। তাই বাঙালি পেয়েছে 'কালের মন্দিরা', ' গৌড়মল্লার ', ' কুমারসম্ভবের কবি', ' শিবাজী ও সদাশিব' এর মত ঐতিহাসিক উপন্যাসকে। ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন " লোকে ইতিহাস পড়িবে না,কিন্তু আপনার বই পড়িবে"।ছোট গল্পেও তার অবদান অনস্বীকার্য। 'ভল্লু সর্দার', 'কর্তার কীর্তি' এই রচনা গুলো বারবার পড়েও পুনরায় পড়ার সাধ থেকে যায় পাঠকের মনে। বই পড়া, রচনার পাশাপাশি ভাষা চর্চার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল বেশ। নিজে সংস্কৃত শিখবেন বলে পণ্ডিতও নিয়োগ করেছিলেন তিনি। 

জীবনের শেষ উনিশ বছর নিজের তৈরী বাড়ি মিথিলা তে কাটিয়েছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়।  তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল শুধু বই আর বই। ভালো পাঠক না হলে ভালো লেখক হওয়া যায় না, শিক্ষিত পাঠক সৃষ্টি করে এক শিক্ষিত লেখকের। এর জলজ্যান্ত উদাহরণ ছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। 
বড়োদের গল্প উপন্যাসের পাশাপাশি শিশু কিশোরদের জন্য ও তাঁর লেখালিখির পরিমাণ কম নয়। শিশু সাহিত্যে তাঁর স্মরণীয় নায়ক চরিত্র ছিল 'সদা শিব'।  

 শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরস্কার প্রাপ্তি :
শরৎ চন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (১৯৬৭)
রবীন্দ্র পুরস্কার ( তুঙ্গভদ্রার তীরে)

তাঁর এই সাহিত্যময় জীবন ছেড়ে অবশেষে ১৯৭০ সালে ২২ সেপ্টেম্বর পুনেতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলা সাহিত্য তাঁর এই অবদানের জন্য তাঁর কাছে চিরঋণী।

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস 

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সংগ্রাম ✍️ ডা: অরুণিমা দাস

 সংগ্রাম
✍️ ডা: অরুণিমা দাস

জীবনে টিকে থাকতে হলে হাজারো ঝড় ঝাপটা সামাল দিয়ে এগোতে হবে। সেই আদিম যুগ থেকে চলছে সংগ্রাম, চার্লস ডারউইনের অরিজিন অফ স্পিসিসে আছে স্ট্রাগল ফর এক্সিস্টেন্স মানে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম। এই জন্যই হয়তো বিবর্তনবাদের উৎপত্তি হয়েছে। আদিম যুগে চার হাত পা ওয়ালা মানুষ থেকে দু পায়ে হাঁটা, দু হাত দিয়ে লড়াই করা "হোমো সেপিয়েন্স" হতে দিনের পর দিন লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে।  

জীবন সবার জন্য এক নয় হয়তো, গরীবদের জন্য আছে বেঁচে থাকার পরনের কাপড়, ক্ষুধা নিবারণের জন্য সংগ্রাম। ধনীদের সংগ্রামটা আবার অন্যরকম। টাকা পয়সা থাকলেও মানসিক শান্তির বড্ড অভাব। নিজের মন ভালো রাখার জন্য লড়াই সেটা বোধহয় আরো বেশি মূল্যবান। যার জন্য যত সংগ্রাম জীবনে তার জন্য অনেক কিছু ভালোও হয়তো আছে। নিত্য জীবনে ডিউটির চাপ, সেখানে সংগ্রাম, উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য সংগ্রাম কারোর আবার রোজকার রুজি রুটি জোগাড় করার জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বেঁচে থাকার এক সংগ্রাম। এক কথায় স্টেশনের ধারে বসে থাকা মানুষ থেকে এসি রুমে চেয়ারে বসে থাকা মানুষ সকলেরই জন্য সংগ্রাম রয়েছে বরাদ্দ। 

"টিকে থাকতে জীবন যুদ্ধে, করছে যে সকলে সংগ্রাম
থেমে থাকলে হবেনা,লড়ে জেতাই হলো আসল পরিণাম।"

©️ রিজার্ভ ফর অরুণিমা দাস

শিরোনাম- সফলতার আছে কি কিছু সূত্র?✍️ ডা:অরুণিমা দাস

শিরোনাম- সফলতার আছে কি কোনো সূত্র? ✍️ ডা:অরুণিমা দাস সফলতার চাবিকাঠি কি! আছে কি কারো জানা! বুদ্ধির গোড়ায় শান দিয়ে যায় কি তারে কেনা? বসে ...